নানা ধরণের মেক আপ সামগ্রী যেমন – ফাউন্ডেশন, কন্সিলার, আইস্যাডো হাইলাইটার, ব্রোঞ্জারের সুন্দর সুন্দর সেইডগুলোর পারফেক্ট এপ্লিকেশনের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে থাকে ব্রাশসেট। মুখের বিভিন্ন অংশে সঠিক ভাবে মেক আপ এপ্লাই করার জন্য রয়েছে নানা ধরণের, সাইজের ব্রাশ।
ভালো মানের ব্রাশের ব্যবহার যেমন মেক আপকে ব্লেন্ড করে পারফেক্টলি তেমনি করে দীর্ঘস্থায়ী ।
নিত্য ব্যবহার্য এসব ব্রাশগুলো মূলত রেগুলার এবং সিন্থেটিক এই দুই ধরণের হয়ে থাকে। রেগুলার ব্রাশগুলোর বেশিরভাগই তৈরী হয় নানা জাতের সহজল্ভ্য পশুর লোম থেকে।
অপরদিকে সিন্থেটিক ব্রাশগুলো তৈরী হয় নাইলন, পলিয়েষ্টার ফাইবার সহ আরো অন্য ফাইবার ব্যবহার করে আর্টিফিসিয়াল প্রযুক্তির মাধ্যমে।
ব্যবহারের দিক থেকে রেগুলার ব্রাশসেট অনেকের পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকলেও উপকারীতার দিক থেকে সিন্থেটিক ব্রাশের গুরুত্বটা একটু বেশি। যেমনঃ
- যেকোন স্কিন টাইপের সাথে মানানসই- সিন্থেটিক ব্রাশগুলো যে কোন স্কিন টাইপেই সুন্দর মেক আপ ব্লেন্ডিং এবং ফিনিশিং দিয়ে থাকে। আর্টিফিসিয়ালি তৈরি হওয়ায় ব্রাশের ব্রিসেলগুলো অয়লি, ড্রাই,সেনসিটিভ এবং কম্বিনাশন কোন টাইপ স্কিনেই কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া করে না।
কিন্তু রেগুলার ব্রাশগুলো বিভিন্ন প্রজাতির পশুর লোম থেকে তৈরি করায় অনেক সময় অনেক স্কিন টাইপে এলার্জিটিক রি-একশন করে থাকে। ফলে মুখ ফুলে যাওয়া, মুখে লালচে ভাব হওয়া, ব্রোণের সমস্যা এসবের ঝুকি থাকে।
- দীর্ঘস্থায়ীতা– রেগুলার ব্রাশগুলোর প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের ফলে এর স্থায়ীত্ব বেশিদিনের হয়না। যত দাম দিয়েই কেনা হোক না কেনো নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ধীরে ধীরে ব্রাশের ব্রিসেলগুলো নষ্ট হয়ে ঝরে যেতে শুরু করে এবং একটা সময়ে হয়ে পড়ে একদম ব্যবহার অযোগ্য।
অন্যদিকে, সিন্থেটিক ব্রাশগুলো আর্টিফিশিয়ালি তৈরি হওয়ায় বারংবার ব্যবহার, ধোয়ার পরেও থাকে একদম নতুনের মত সাথে ব্রিসেলগুলোর সেইপেও থাকে অপরিবর্তনীয়। ফলস্বরুপ রেগুলার ব্রাশের থেকে সিন্থেটিক ব্রাশ হয় অনেক সাশ্রয়ী।
- পরিষ্কারে সুবিধা– সিন্থেটিক ব্রাশগুলো পরিষ্কার করা অনেক সহজ রেগুলার ব্রাশের তুলনায়। ভালোভাবে কয়েকবার ধোয়ার পরেও রেগুলার ব্রাশের কিউটিকলের ব্রিসেলে মেক আপ আটকে থেকে যায় এবং এভাবে দিনের পর দিন জমে জমে ব্রাশের গোড়ায় তৈরি হয় ব্যাক্টেরিয়া যা থেকে পরবর্তীতে মুখে পিম্পল,ব্রোণের সমস্যা দেখা দেয়।
অন্যদিকে সিন্থেটিক ব্রাশগুলো নাইলন কিংবা পলিয়েষ্টার ফাইবারের হওয়ায় এর এন্টি-ব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের জন্য ব্রাশের ব্রিসেলে ব্যাক্টেরিয়া জন্মাতে পারে না এবং প্রথমধোয়াতেই ব্রাশ হয় একদম পরিষ্কার।
- মেক আপের পরিমিত ব্যবহার– রেগুলার ব্রাশের ব্রিসেলের কিউটিকলে প্রচুর পরিমাণে মেক আপ শোষণ করায় দরকারের তুলনায় মেকআপ নষ্ট হয় অনেক বেশি আবার ব্যবহার শেষে ব্রাশ পরিষ্কার করতেও হয় ঝামেলা।
সেই তুলনায়, মেকআপের সময় সিন্থেটিক ব্রাশ ব্যবহার করলে যেমন মেকআপ লাগে অল্প তেমনি নষ্টও হয় কম!
- ব্রাশের টেক্সচার থাকে অটুট– সফট টেক্সচারের ব্রাশ সবার পছন্দের। কিন্তু রেগুলার ব্রাশগুলো প্রাকৃতিক লোমের তৈরী হওয়ায় বারংবার ব্যবহার এবং ধোয়ার ফলে নরম টেক্সচারটা হারিয়ে ফেলে তাড়াতাড়ি।
অন্যদিকে, আর্টিফিশিয়াল ফাইবার দিয়ে তৈরি হওয়ায় সিন্থেটিক ব্রাশগুলোর সফট টেক্সচারটি বহুদিন ব্যবহারের পরেও থাকে অপরিবর্তিত।
এখন হয়তো ভাবছেন, কোন ধরণের ব্রাশ ব্যবহার করবেন, রেগুলার নাকি সিন্থেটিক ? ব্যবহারের মাত্রা অনুযায়ী, যারা নিয়মিত মেকআপ করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য সিন্থেটিক ব্রাশসেটই সবচেয়ে সাশ্রয়ী এবং আরামদায়ক ।
অপরদিকে যারা খুব একটা মেকআপ করেন না শুধু মাঝে মধ্যে অনুষ্ঠানের জন্য সাজতে বসেন আপনারা চাইলে রেগুলার ব্রাশসেটও ব্যবহার করতে পারেন।